You are currently viewing ধিক্কার জানাই এইরকম প্রথাকে।

ধিক্কার জানাই এইরকম প্রথাকে।

62488941_525226501346915_7396294680008196096_n

চট্রগ্রামের বিয়ে নামে পাত্র পাত্রীর বাবা মাকে জীবন্ত লাশ বানানো হচ্ছে

পৃথিবীর অন্য জায়গা থেকে চট্রগ্রাম হচ্ছে সম্পূর্ণ আলাদা। কারন চট্রগ্রামের মানুষ যৌতুক ছাড়া বিয়ে করে না। চট্রগ্রামের মানুষ যৌতুককে বৈধতা দিয়েছে দীর্ঘকাল থেকে। এখানে যৌতুক নেওয়াটা ফ্যাশনে পরিণত হয়েছে। চট্রগ্রামের মানুষ বিয়ের সময় টাকা নেওয়াকে যৌতুক মনে করে আর বাকি গুলোকে তাদের অধিকার মনে করে।
যৌতুকের বিভিন্ন ধরনের রূপ নিম্নে উল্লেখ করা হল।

64259954_525226701346895_7913198314818895872_n

 

১: খাবারের পর্ব :-
চট্রগ্রামে বিয়ের সময় বর পক্ষের ৫০০/৮০০/১০০০ মানুষকে খাওয়াতে হয়। খাওয়ার ম্যানুতে থাকে চিংড়ি/গরুর মাংস/খাসির মাংস/রূপচাঁদা মাছ/ডিম/পোলাও ভাত/মুরগি/চিকেন টিক্কা/পায়েস/মিনারেল ওয়াটার/কুক ও বিভিন্ন ধরনের সবজিসহ আরো অনেক কিছু। এসব আইটেম থেকে কিছু কম হলে বা কোন আইটেমে সামান্য লবণ বেশি বা হলে শুরু হয়ে যাবে কনে পক্ষের সাথে বিতর্ক। কারন বর পক্ষ এগুলো তদারকির জন্য একজন ব্যারিষ্টার রাখে যার কাজ হল কনে পক্ষের দোষ বের করা।

তবে বিয়ের পূর্বে যদি আকদ হয় তখন কিন্তু প্রায় ২০০/৩০০ জন মানুষের খাবারের আয়োজন করতে হয়। বিয়ের পর শুরু হয় বিভিন্ন পর্বের দাওয়াত নতুন জামাই বিয়ের পর শাশুর বাড়িতে যাবে তবে একা যেতে পারবে না বা ১০-১৫ জনকেও নিয়ে যেতে পারবে না। নতুন জামাইকে ৮০/১০০/১৫০ জনের বিশাল বহর নিয়ে শাশুর বাড়িতে যেতে হবে না হয় মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে। যারা নাম চট্রগ্রামের ভাষায় (চোরা বেরানি)। এখানে কিন্তু খাবারের আইটেম রাখতে হবে বিয়ের আইটেমের চেয়ে বেশি। এখানে কিন্তু অনেক কু-প্রথা চালু রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ”চোরা বেরানিতে” কনে পক্ষের জিনিস চুরি করা। এবার নতুন জামায়ের পর্ব শেষ হলে কিছুদিন পর শুরু হবে শাশুর ও শাশুড়ি পর্ব কারন নতুন জামায়ের সাথে শাশুড়ি আসতে পারবে না কারন এটা তথাকথিত ”বুড়া/বুড়ির” মানা (নিষেধ)।

শাশুড়িও তাদের বিশাল বহর নিয়ে এসে খেয়ে যাবে এবং কিছু খাবার সাথে নিয়ে যাবে। এখানে কিন্তু শেষ না। বিয়ের সময় বরের ভাই/বোনের জামায় বা অন্য কেউ বিদেশে ছিল যার কারনে সে আসতে পারে নাই। তাই সে যখন দেশে আসবে তখন সে কিন্তু এখলা বা ২/৩ জন নিয়ে যেতে পারবে না তার সাথেও অনেক জন যেতে হবে। তবে সে শুধু খেয়ে আসলে হবে না। খাবারের পর তাকে একটা স্বর্ণের আংটিও দিতে হবে। এরপর শুরু হবে চট্রগ্রামের ভাষায়
”বছরি জিনিস” দেয়ার পালা। অর্থাৎ আমের মৌসুম আসলে দিতে হয় ৫০-৬০ কেজি আম, আনারস, কাঠালসহ আরো বাহারি রকমের ফল।

রমজানের সময় দিতে হয় মেয়ের শাশুর বাড়ির চৌদ্দ গোষ্টিকে ইফতারি আরো অনেক আইটেম।

ঈদের সময় দিতে হয় ছেলের পরিবার, বোনের স্বামীসহ সবাইকে শপিং করে দিতে হয়। তবে ঈদের সময় ছেলে পক্ষের সবাই আসবে এটা স্বাভাবিক বিষয় এবং এর ফলে দুই পরিবারের মাঝে সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হয়।

কুরবান আসলে দিতে হবে গরু, গরু রান্না করার জন্য তৈল, মসাল্লা, পিয়াজ ইত্যাদি, মহরম আসলে দিতে হবে ১৫/১৬টি মুরগি ও ৮/১০ কেজি গরুর মাংস রান্না করে।
শীতকাল আসলে দিতে হবে কয়েকশ শীতেরপিটা, তালপিটা ইত্যাদি। এছাড়া বাৎসরিক জিনিসের মধ্যে আরো অনেক আইটেম রয়েছে যেগুলু সময়ের কারনে উল্লেখ করা হয় নাই।

২: ফার্নিচার ও বিভিন্ন জিনিস এবং বাদরুমের বদনা:- চট্রগ্রামে বিয়ের পূর্বেই বর পক্ষের বাড়িতে ফার্নিচার পৌঁছে দিতে হয়। ফার্নিচারের মধ্যে থাকে দামি বিভিন্ন ধরনের উন্নতমানের জিনিস। ফ্রিজ, টিভি, গ্যাসের চুলা এগুলোও বাধ্যতামূলক দিতে হয়। এছাড়া কনে পক্ষের অতিথিদের দেয়া সব উপহারের জিনিসও বর পক্ষকে দিয়ে দিতে হয়। এখানে কিন্তু শেষ না বাদরুমের বদনা থেতে শুরু করে আরে অনেক ধরনের জিনিস দিতে হয়।

৩: আকিকা:- বিয়ের পর যখন কনের বাচ্চা হয় তখন কিন্তু আকিকার গরুটাও কনে পক্ষ থেকে দিতে হয়।
এছাড়া বাচ্চার দোলনা, বিভিন্ন ধরনের কাপড়সহ আরো অনেক কিছু দিতে হয়।

এখানে কিন্তু আরো কিছু আছে যেগুলো সময়ের অভাবে লিখতে পারছি না।

বি:দ্র:- এখানে আমি চট্রগ্রামের বিয়ের বাস্তব চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করছি, যদিও আমার চিত্রের সাথে অনেক জায়গার চিত্র মিল আছে। আবার অনেক জায়গার অবস্থা আরো খারাফ। যদিও চট্রগ্রামে কিছু যৌতুক ছাড়া বিয়ে হয় কিন্তু সেরকম বিয়ে হয় হাজারের মধ্যে মাত্র কয়েকটি।

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে বদলে গেছে সমগ্র বিশ্ব। এমনকি আমাদের দেশও অনেক বদলে গেছে। কিন্তু বদলাতে পারি নাই আমরা চট্রগ্রামের মানুষ গুলো। আমাদের সমাজ থেকে দূর করতে হবে এসব অপসংস্কৃতি গুলো। দু:খের বিষয় হচ্ছে এসব অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সচেতনতা চালানোর মানুষ খুবই কম আর যারা আছে তাদের কেউ মূল্যায়ন করে না। যার ফলে তারাও নিশ্চুপ হয়ে যাচ্ছে।
অবশেষে বলতে চাই শুধু আমাদের চিটাগাং না দেশের যেসমস্ত জেলায়
যেসব জালেমরা যৌতুকের দাবি করে অবিভাবকের উচিত তাদের সাথে বিয়ে না দেয়া। কেননা সে টাকাকে বিয়ে করবে এবং টাকা শেষ হলে ভালবাসাও শেষ হয়ে যাবে।

(উপরে উল্লেখিত বিষয় জেনে সবাই আবার চট্টগ্রামের লোকদের খারাপ ভাববেন সবাই কিন্তু এক না আমি নিজেও চিটাগাং এর)

আসুন আমরা সকলে এসব অপসংস্কৃতি বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়।

আসুন ধর্মীয় মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলে ইসলামি ভাবধারায় নিজের জীবন পরিচালিত করি।
নিজে বাচি পরিবার কে বাচাই।

কালেক্টেডঃ ফেসবুক