You are currently viewing মোটিভেশন আপনাকে সাকসেস এনে দিতে পারবে না

মোটিভেশন আপনাকে সাকসেস এনে দিতে পারবে না

ভালো একটা চাকরি হইলে, নিজেদের একটা গাড়ি থাকলে, জীবনটা কতই না সুখের হইতো। সহজ হইতো। এই রকম সুখের চিন্তা করতে করতে, চোখ বন্ধ করে একটু আধটু সুখের পরশ অনুভব করে ফেলি অনেকেই। কিন্তু কখনই ভেবে দেখি না, সুখের চিন্তা করতে করতে, ভিতরে ভিতরে নিজেরাই অলস হয়ে গেছি। একটু উল্টা করে ভেবে দেখুনতো কেমন লাগে? একটা ভালো চাকরি ম্যানেজ করতে না পারলে, সংসারের খরচ- বাসা ভাড়া যোগাড় না হইলে, পথে বসতে হবে। প্রেমিকার বাসায় প্রস্তাব পাঠানোর আগেই রিজেক্ট হয়ে যাবে। গাড়ি না থাকলে ঘন্টার পর ঘন্টা সিএনজির জন্য অপেক্ষা করতে করতে সময় নষ্ট হয়। গরমে-ঘামে বাসে ঝুলতে ঝুলতে টায়ার্ড হয়ে বাসায় ফিরে এক্সট্রা কোন কাজ করার টাইম বা এনার্জি পাই না। বাচ্চারে স্কুলে আনা-নেয়া করতে করতে রাস্তার ধুলাবালিতে বাচ্চা অসুস্থ হয়ে যায়। একই জিনিস, কষ্টের এঙ্গেল থেকে চিন্তা করলে জিনিসটাকে পাওয়ার ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা তীব্রতর হয়ে উঠে। সেটা অর্জনের জন্য শ্রম সাধনা করতে নিজের ভিতর থেকেই উদ্যম আসে। আর কষ্টের ভয়টাই সেই উদ্যম ধরে রাখে। কারণ, সুখের আশায় চাইলে আপনার ভিতরে যতটা পাওয়ার আসবে, কষ্টের ভয় থেকে পাইতে চাইলে কয়েক শতগুন বেশি পাওয়ার আসবে। তাই আজকে থেকে সুখের এঙ্গেল থেকে চিন্তা করা বন্ধ।

কষ্টের এঙ্গেল থেকে চিন্তা করা আর ব্যর্থতাকে ভয় পেয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখা এক কথা নয়। শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হইলে অন্যরা কে কি নিয়ে হাসাহাসি করবে, সেটা নিয়ে ভাবতে ভাবতে, আসল কাজটা করতে ভুলে গেলে, জীবনেও টার্গেটের আশেপাশে যাইতে পারবেন না। কয়েকদিন পরে কনফিডেন্স হারিয়ে ফ্রাস্ট্রেটেড হয়ে যাবেন। নার্ভাস হয়ে যাবেন। প্রোকাস্টিনেট করা শুরু করে দিবেন। এবং আগে যেখানে ছিলেন, সেখানেই থেকে যাবেন, আজীবন।

তবে মাঝে মধ্যে কোথাও মোটিভেশনাল কিছু দেখলে পাঁচ মিনিটের জন্য মোটিভেশনের চুলকানি উঠবে। কিন্তু সেই চুলকানি বেশিক্ষণ টিকবে না। অন্যের জীবন, অন্যের গল্প, অন্যের স্ট্রাগল, অন্যের সফলতার ঈর্ষা আপনাকে পাঁচ মিনিটের চুলকানি মার্কা মোটিভেশন দিলেও, আপনাকে সাকসেস এনে দিতে পারবে না। কারণ ঐটা আপনার লাইফের সিচুয়েশন না। অন্যের স্ট্রাগলের স্টোরি শুনে নিজের ভিতরে একটা কম্পিটিটিভনেস তৈরী করতে পারলেও, সেই কম্পিটিটিভনেস ধরে রাখার জন্য আপনার ভিতরে, আপনার জীবনের মধ্য থেকে মোটিভেশন খুঁজে বের করতে হবে। নিজের জীবনের কোন কষ্টটা কমাতে চান, কোন ক্ষতটা লাগব করতে চান, কোন দুঃখটা মোচন করতে চান, সেটা আপনার জীবন থেকে আপনাকেই খুঁজে বের করতে হবে। নিজেই নিজের ভিতরে চাপা একটা ক্রোধ তৈরী করতে হবে। সেই চাপা ক্রোধ, সেই কষ্টের ক্ষত, সেই না পাওয়ার বেদনা আপনাকে সকাল-বিকাল তাড়া করে ফিরলে, মোটিভেশনের আগ্নেয়গিরি পেয়ে যাবেন। যে আগ্নেয়গিরি তপ্ত লাভা নির্গমন করে লক্ষ্য অর্জন করতে জানে।

 

সুত্রঃ ঝংকার মাহবুব