কেমিস্ট্রি ভয় লাগে কারন লম্বা লম্বা রিঅ্যাকশনের আগা মাথা কিচ্ছু আপনার মাথায় ঢুকে না। তো, সেগুলা বুঝেন না দেইখ্যা কেমিস্ট্রি পড়া তো দুরে থাক বই খুলতেই ইচ্ছা করে না। কারণ আপনার মনে হয় এই সাবজেক্ট অনেক কঠিন। অন্য সব সাবজেক্ট পড়া হইলেও কেমিস্ট্রি পড়া হয় না। এখন ব্যাপারটা যদি উল্টা দিক থেকে সামারি আকারে দেখি তাইলে দাড়ায় “আপনি কেমিস্ট্রি পড়েন না, তাই পারেন না”
তেমনি আপনার স্বপ্ন বা লক্ষ্য কখনোই আরামের হবে না। অন্যরা সবাই সন্ধ্যার সময় চা বিস্কুটের আড্ডায় বাংলাদেশ টিম কিভাবে হারছে সেটা নিয়ে গবেষণায় ব্যস্ত। আপনি টুক টুক করে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। সবাই নাটক দেখে নাক ঢেকে ঘুমাচ্ছে আর আপনি জেগে আছেন। সবাই অফিস করে বাসায় চলে গেছে, আপনি সাধনা চালিয়ে যাচ্ছেন। কানে হেডফোন দিয়ে চেংড়া পোলাপান গান শুনছে, “চিকেন তান্দুরি” বা “ঢাকার পোলা ভেরি ভেরি স্মার্ট” আর আপনি শুনছেন GRE ওয়ার্ড।
আপনি যদি জীবনে মোড় নিতে চান, নতুন কিছু করতে চান, পাশে কাউরে পাবেন না। এমনকি আপনার নিজের বাপ-মা ই বাগড়া দিয়ে বসবে। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার ছাড়া জীবনে কেউ কিছু করতে পারে সেটা তাদের মাথায় ঢুকে না। আমার একটা ফ্রেন্ড ছিলো যারে তারবাবা ক্রিকেট খেলতে যেতে দিতো না। সে প্রাকটিস করার জন্য মুজার ভিতর বল ঢুকিয়ে সিলিং থেকে ঝুলিয়ে প্রাকটিস করতো, যখন তার বাবা বাসায় ছিলো না। তাসকিনের বাবা তার পিঠে ব্যাট ভাঙ্গছিলো। তারা হেল্প করাতো দুরে থাক, দূর থেকে দাড়িয়ে উপহাস করবে। তারপরেও আপনাকে আপনার লক্ষে এগিয়ে যেতে হবে। যদি তোর ঢাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চলো রে। একলা চলতে গেলে হোচট খাবেন, ভুল করবেন, ব্যখ্যা খুঁজে পাবেন না আপনি কেনো সেটা করছেন। একসময় নিজেই মনে করবেন, “অনেক হইছে বাপ এইবার বাদ দাও” কিন্তু ছেড়ে দেয়া যাবে না। নিজের উপর ভরসা রাখতে হবে। দিনাজপুরে কে জানি শেষ বয়সে এসে ডিগ্রী পাশ করছে ২৭বার বা তরো বেশি বার পরিক্ষা দিয়ে। এমনকি নিজের ছেলের সাথে পরীক্ষা দিতেও হয়েছে তাকে।
তো আপনি ছেড়ে দিতে পারবেন না। যতক্ষণ না আপনি যেটা করতে চাইছিলেন সেটা অর্জন করতে পারেন। আপনি মাঝপথে ক্লান্ত হবেন, পায়ে ফোস্কা পড়বে তাও লেগে থাকতে হবে। কারণ যতক্ষণ না আপনি ছেড়ে দিয়ে পালাচ্ছেন ততক্ষণ সম্ভাবনা থাকবে সফল হবার। তাই কয়েকদিন পর পর নিজেরে জিগ্যেস করুন, “আমি কি নিজেরে চ্যালেঞ্জ করছি, নতুনভাবে কোনো কিছু করার জন্য ট্রাই করছি বা নতুন কিছু শিখছি? নাকি যেটুকু পারি সেটা নিয়ে আরামসে নাক ঢেকে ঘুমাচ্ছি”
এখন আপনি যদি জিগ্যেস করেন, “ভাই আমারতো আইডিয়া নাই, কি করবো। নতুন কোনো আইডিয়া দেন” আমার উত্তর হচ্ছে কবরস্থানে চলে যান। কারণ দুনিয়ার হাজার হাজার মানুষ তাদের স্বপ্ন বা আইডিয়া নিয়ে দুনিয়ায় থাকা অবস্থায় কিচ্ছু করে নাই। এখন সেগুলা নিয়ে কবরে শুয়ে আছে। আপনি সেখানে যান, আইডিয়া গুলা এখনো ফ্রেশই আছে। উনারা শুরুই করে নাই এমনকি কাউরে বলেও নাই। বাই দ্যা ওয়ে, আপনিও আপনার আইডিয়া নিয়া কবরে চলে যেতে পারেন। ব্যপারটা মন্দ না। আপনার টাইপের সাঙ্গপাঙ্গ লাখো লাখো আছে।
সুত্রঃ ঝংকার মাহবুব