You are currently viewing আড্ডাবাজি কন্ট্রোল করে পড়ালেখা

আড্ডাবাজি কন্ট্রোল করে পড়ালেখা

স্টুডেন্ট লাইফের সবচেয়ে উপভোগ্য জিনিস হচ্ছে আড্ডা। আবার স্টুডেন্ট লাইফের সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক জিনিস হচ্ছে আড্ডা। এই আড্ডা আপনার জীবনকে বর্ণিল করে দিতে পারে। গল্প, মাস্তি, পচানি দিয়ে আপনার স্টুডেন্ট লাইফের প্রতিটা মুহূর্তকে উজ্জ্বল তারায় ভরে দিতে পারে। আবার এই আড্ডাই আপনাকে সিগারেট, গাজা, নেশাখোর বানিয়ে দিতে পারে। ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডায় বসে বসে জীবনে বিশাল কিছু হবার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করতে পারেন। আবার আড্ডাই আপনাকে তাস-খোর, জুয়াড়ি, ভিডিও গেমস এডিক্টেড বানায় ফেলতে পারে।

স্টুডেন্ট লাইফ পার করতে হলে আপনাকে আড্ডাবাজি করতেই হবে। হলে বা মেসে থাকলে আড্ডা-গিরি জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠবে। সারাদিনের ক্লান্তি কিংবা পড়তে পড়তে বোরর্ড হয়ে গেলে আশেপাশের রুমে উকি মেরে দশ মিনিটের আড্ডা মেরে ফ্রেশ হওয়া যেতে পারে। তবে আড্ডায় ডুবে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়ে দেয়া যাবে না। রাতভর চলতে থাকা আজাইরা যুক্তি তর্কের বেড়াজালে আটকা পড়া যাবে না। টায়ার্ডনেস কেটে গেলে বাথরুমের কথা বলে উঠে আসতে হবে।

তবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা হয় যখন আড্ডা আপনার রুমে জমতে চায়। আড্ডা গোড়াপত্তন করার আগেই, ধূলিসাৎ করতে হবে। কারণ আড্ডাকে ডিসট্রাকট করতে না পারলে, আড্ডা আপনার কাজের প্ল্যানকে ডিসস্ট্রাকড করে দিবে। তাই সমাধান হিসেবে- খিধা লাগছে, নীচে যাবো খাইতে, গোসল করতে হবে, ফটোকপি করতে যাবো, স্যারের সাথে দেখা করতে যাবো বলে উঠে যেতে হবে। তবে তাড়িয়ে দেয়ার সবচেয়ে এফেক্টিভ সিস্টেম হচ্ছে- পাশের হলে শাকিলের কাছে যেতে হবে টাকা ধার চাইতে। তোর কাছে হাজার তিনেক টাকা হবে?

ছোট খাটো ২০-২৫ মিনিটের দুই তিনটা ডিসস্ট্রাকশন আপনার সারাদিনের প্ল্যানটাকে গুলিয়ে ফেলার জন্য যথেষ্ট। কারণ একবার মনোযোগ অন্য দিকে ঘুরে গেলে সেখান থেকে মনোযোগ দুই-তিন ঘন্টায়ও ফেরৎ আনা যায় না। বেশির ভাগ সময় আমরা আসল কাজের কথাই ভুলে যাই।

তাই যে কাজগুলি ডিসস্ট্রাক করে, তাদের একটা একটা করে কন্ট্রোল করতে হবে। দরকার হলে- তিন ঘন্টা ফোন বন্ধ করে রাখেন, ফেইসবুক একদিন ডিএক্টিভ করে রাখেন, স্ন্যাপচ্যাট, ভাইবার সবকিছুইতেই থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। প্রয়োজনে একটা ট্যুর মিস করেন, একটা পার্টিতে অনুপস্থিত থাকেন। কেউ ফ্রি খাওয়াবে বলেই লাফাইয়া চলে যাওয়া আগে চিন্তা করে দেখেন- খাইতে, যাইতে, আসতে মোট যে পরিমাণ টাইম লস হবে, ফ্রি খেয়ে সেই পরিমাণ লাভ হবে কিনা। দরকার হলে, রুমের বাইরে তালা দিয়ে ভিতরে বসে বসে কাজ করেন। যেটা করতে চাচ্ছেন, যতটুকু পড়ে শেষ করতে চাচ্ছেন, ততটুকু পড়ে শেষ করেন। চেষ্টা করেন। খেটে খেটে মরেন।

তবে আপনার স্পেশাল কয়েকজন ফ্রেন্ড থাকলে। যারা প্রতি মঙ্গলবার রাত দশটার পর শেরেবাংলা হলের ৪০৬ নম্বর রুমে ইংলিশ আড্ডার আয়োজন করলে। সেখানে ইংরেজিতে কথা বলার প্রাকটিসের পাশাপাশি সিভি বানানোর উপায়, শব্দের উচ্চারণের উৎপত্তি, জনপ্রিয় বুক বা মুভি রিভিও, দেশ বিদেশের হিস্ট্রি নিয়ে ইংরেজিতে আড্ডার আয়োজন করা হইলে, সেই আড্ডার এক সেকেন্ডও মিস করা যাবে না।

 

সুত্রঃ ঝংকার মাহবুব