You are currently viewing খারাপ রেজাল্টওয়ালাদের ভবিষ্যত.

খারাপ রেজাল্টওয়ালাদের ভবিষ্যত.

কেউ ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিসিএস ক্যাডার না এনজিও অফিসার হবে, তা এইচএসসির রেজাল্ট বা ভর্তি পরীক্ষার উপরে কিছুটা নির্ভর করলেও, জীবনের সফলতা-ব্যর্থতার পাঁচ পার্সেন্টও এইচএসসির রেজাল্টের উপর নির্ভর করবে না। ধরেন, আপনি গোল্ডেন ৫ পেয়ে গেলেন। আপনার কি ভালো ভার্সিটিতে বা মেডিকেলে চান্স হয়ে গেলো? ভালো সাবজেক্ট কনফার্ম হয়ে গেলো? জীবনে সফল হয়ে গেলেন?

মোটেও না। বরং ভালো রেজাল্ট হইলে সমস্যা বেশি। আমি অনেককেই দেখছি- HSC তে ভালো রেজাল্ট করে, ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে সিরিয়াসনেস কমায় দিয়ে, নরমাল কনফিডেন্সরে ওভার কনফিডেন্স বানাইয়া হাওয়া খাওয়া শুরু করে সব গুবলেট পাকিয়ে ফেলে কেউ কেউ।

আমাদের আমলে, আমার বোর্ডের ফার্স্ট স্ট্যান্ড করা ছেলেটি, বুয়েটে চান্স পায়নি। ফার্স্ট ডিভিশনে পাশ করা ছেলেটি, কোন উপান্তর না দেখে টানা দুই মাস দরজা বন্ধ করে কুত্তার মত পড়ালেখা করে ঠিকই চান্স পেয়ে গেছিলো। আপনি এত দিন পরিশ্রম করে কি পাইছেন আর কি পাননি, তার চাইতে বেশি ইম্পরট্যান্ট হচ্ছে নেক্সট কিছু দিন কি করতে পারবেন না করতে পারবেন। লাস্ট মোমেন্টে কি খেল দেখাতে পারবেন।

যে ভার্সিটিতে যে সাবজেক্টে পড়তে চাচ্ছেন, সেটাতে চান্স না পাইলেই বা ফ্যামিলি জোর করে অন্য কোথাও ভর্তি করাই দিলেই, আপনার জীবন ছ্যাড়াবেড়া হয়ে যাবে তা কিন্তু না। নরমাল ভার্সিটিতে, নরমাল সাবজেক্টে পড়েও, ভালো ভার্সিটির ভালো স্টুডেন্টের চাইতে অনেক বেশি সফল হওয়া যায়। এমন শত শত নজির আছে। শত শত নজির আছে বলেছি। কোটি কোটি নজির আছে বলি নাই। কারণ, কোটি কোটি মানুষ পিছনে পড়ে গিয়ে, পরাজয় মেনে নিয়ে, হতাশ হয়ে ঘ্যানর ঘ্যানর কান্নাকাটি করে, হাত পা ঘুটিয়ে, সারাজীবন পিছনেই পড়ে থাকবে। আর তাদের মধ্যে কেউ কেউ পিছনে পড়ে গিয়েও, উঠে দাঁড়ানোর আপ্রাণ চেষ্টা করবে। সামনের দরজা বন্ধ হয়ে গেলে, পিছনের দরজা খুঁজবে। দরজা না পাইলে জানালা, চিপা-চাপা, কোনা-কানি খুঁজবে। একবার দুইবার চেষ্টা করে খুলতে না পারলে, দিনের পর দিন, রাতের পর রাত সাধনা করে লাথি, গুঁতা দিয়ে ভাঙ্গার চেষ্টা করেই যাবে। হাতুড়ি বাটাল খুঁজে না পাইলে, খালি হাত পা দিয়েই ভাঙ্গার চেষ্টা করবে। চেষ্টা করতে করতে ফোস্কা পড়ে গেলেও, মলম লাগিয়ে, ক্ষতের মধ্যে মাটি লাগিয়ে আবার চেষ্টা করবে। তারাই এগিয়ে যাবে। একদিন না একদিন জয় ঠিকই ছিনিয়ে আনবে। আজকে হয়তো অন্য কেউ এগিয়ে আছে, সাধনা-চেষ্টা-লেগে থাকার কাছে ট্যালেন্ট, বাপের টাকা একদিন হার মানবেই।

সফল হইতে হলে, আজকে গর্তে না পাহাড়ের চূড়ায় আছেন বড় কথা নয়। বড় কথা হচ্ছে কতদিন কতদিন লেগে থাকতে পারবেন? একভাবে না পারলে, কতভাবে ট্রাই করতে পারবেন? এক চেষ্টায় না ভাঙ্গলে, কত চেষ্টা করতে পারবেন? একজন হেল্প করলে, কতজনের পিছনে ঘুরেতে পারবেন? এক রাতে না হলে, কত রাত জেগে জেগে সাধনা চালাতে পারবেন? দুনিয়ার মোজ মাস্তি আরাম আয়েশ, আড্ডা, টাইম অপচয়ের মেশিন গুলাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে নিজেকে কতদিন লাইনে রাখতে পারবেন?

নাকি স্রোতের সাথে গা এলিয়ে, হারিয়ে যাবেন অথৈ সাগরে?

 

সুত্রঃ ঝংকার মাহবুব